fbpx
ইসলাম একক পূর্নাঙ্গ ধর্ম। জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে রয়েছে দিক নির্দেশনা ও সঠিক হেদায়েত।তাই সন্তান ভুমিষ্ট হওয়ার পর সন্তান-এর আকিকা করার ব্যপারে প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উৎসাহিত করেছেন।
আকিকা

সূচিপত্র

আকিকা

ইসলাম একক পূর্নাঙ্গ ধর্ম। জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে রয়েছে দিক নির্দেশনা ও সঠিক হেদায়েত।তাই সন্তান ভূমিষ্ঠ হওয়ার পর সন্তান-এর আকিকা করার ব্যপারে প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উৎসাহিত করেছেন এবং নিজেই হযরত হাসান ও হযরত হুসাইন রাযিআল্লাহু আনহুমার আকিকা করেছেন। তাই একদিকে আকিকা পালনের মাধ্যমে যেমনিভাবে রাসূলের উক্ত সুন্নাতের অনুসরণ করা হয় তেমনি ভাবে ঐ নবজাতক শিশুকে আল্লাহ তায়ালা অসুস্থতাও যাবতীয় বিপদাপদ থেকে হেফাজতে রাখেন।তাই সন্তানের আকিকা করা কাম্য।একটি হাদিসে প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন

، عَنْ عَمْرِو بْنِ شُعَيْبٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ جَدِّهِ قَالَ: سُئِلَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَنِ الْعَقِيقَةِ فَقَالَ: لَا يُحِبُّ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ الْعُقُوقَ»، ، قَالَ لِرَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: إِنَّمَا نَسْأَلُكَ أَحَدُنَا يُولَدُ لَهُ، قَالَ: «مَنْ أَحَبَّ أَنْ يَنْسُكَ عَنْ وَلَدِهِ، فَلْيَنْسُكْ عَنْهُ عَنِ الْغُلَامِ شَاتَانِ مُكَافَأَتَانِ، وَعَنِ الْجَارِيَةِ شَاةٌ» قَالَ دَاوُدُ سَأَلْتُ زَيْدَ بْنَ أَسْلَمَ عَنِ الْمُكَافَأَتَانِ قَالَ: «الشَّاتَانِ الْمُشَبَّهَتَانِ تُذْبَحَانِ جَمِيعًا

আমর ইব্‌ন শুআয়ব (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ তাঁর পিতার মাধ্যমে, তাঁর দাদা থেকে বর্ণনা করেন। তিনি বলেনঃ রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে আকীকা সম্বন্ধে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেনঃ আল্লাহ্‌ তা‘আলা মাতাপিতার অবাধ্যতাকে পছন্দ করেন না । ঐ ব্যক্তি আরয করলোঃ ইয়া রাসূলুল্লাহ্! আমি আপনার নিকট জিজ্ঞাসা করছি, কারো সন্তান হলে সন্তানের পক্ষ হতে যা যবেহ করা হয় সেই বিষয়ে। তিনি বললেনঃ যে ব্যক্তি স্বীয় সন্তানের পক্ষ হতে যবেহ করতে ইচ্ছে করে, সে যেন ছেলে সন্তানের পক্ষ হতে দু’টি বকরী যবেহ করে একই ধরনের এবং কন্যা সন্তানের পক্ষ হতে একটি বকরী যবেহ করে। রাবী দাউদ (রহঃ) বলেনঃ আমি যায়দ ইব্‌ন আসলাম (রহঃ)-এর নিকট জিজ্ঞাসা করলাম, এক প্রকার অর্থ কি? তিনি বললেনঃ দেখতে যেন একই প্রকার হয়, একত্রে যবেহ করা হয়।
(সুনানে আন-নাসায়ী, হাদিস নং ৪২১২)

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজেই বাস্তব জীবনে আকিকার বিধান পালন করেছেন।একটি হাদিসে এসেছে

، عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ قَالَ: «عَقَّ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَنِ الْحَسَنِ وَالْحُسَيْنِ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا بِكَبْشَيْنِ كَبْشَيْنِ

ইব্‌ন আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ:তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হাসান এবং হুসায়নের আকীকায় দু’টি করে বকরী যবেহ করেন।
(সুনানে আন-নাসায়ী, হাদিস নং ৪২১৯)

আকিকার উত্তম সময়;

অভিজ্ঞ আলিমগণ মনে করেন শিশু জন্মগ্রহণ করার সপ্তম দিনে তার পক্ষে আকীকা করাটা মুস্তাহাব, সপ্তম দিনে অক্ষম হলে চৌদ্দতম দিনে এবং সেই তারিখেও অক্ষম হলে একুশতম দিনে। ইমাম তিরমিযি রহ উক্ত বিষয়টি এভাবে উল্লেখ করেছেন

وَالْعَمَلُ عَلَى هَذَا عِنْدَ أَهْلِ الْعِلْمِ يَسْتَحِبُّونَ أَنْ يُذْبَحَ عَنِ الْغُلاَمِ الْعَقِيقَةُ يَوْمَ السَّابِعِ فَإِنْ لَمْ يَتَهَيَّأْ يَوْمَ السَّابِعِ فَيَوْمَ الرَّابِعِ عَشَرَ فَإِنْ لَمْ يَتَهَيَّأْ عُقَّ عَنْهُ يَوْمَ حَادٍ وَعِشْرِينَ ‏

একটি হাদিসে প্রয়নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন

، عَنْ سَمُرَةَ بْنِ جُنْدُبٍ، عَنْ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: كُلُّ غُلَامٍ رَهِينٌ بِعَقِيقَتِهِ تُذْبَحُ عَنْهُ يَوْمَ سَابِعِهِ وَيُحْلَقُ رَأْسُهُ وَيُسَمَّى

সামুরা ইব্‌ন জুনদুব (রাঃ) রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেনঃ প্রত্যেক সন্তান স্বীয় আকীকার সাথে আবদ্ধ। তার পক্ষ হতে তা তার জন্মের সপ্তম দিনে যবেহ করতে হবে। সেদিন তার মাথা মুণ্ডন করতে হবে এবং তার নাম রাখতে হবে।
(সুনানে আন-নাসায়ী, হাদিস নং ৪২২০)

অপর এক হাদীসে এসেছে

حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ حُجْرٍ، أَخْبَرَنَا عَلِيُّ بْنُ مُسْهِرٍ، عَنْ إِسْمَاعِيلَ بْنِ مُسْلِمٍ، عَنِ الْحَسَنِ، عَنْ سَمُرَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏ “‏ الْغُلاَمُ مُرْتَهَنٌ بِعَقِيقَتِهِ يُذْبَحُ عَنْهُ يَوْمَ السَّابِعِ وَيُسَمَّى وَيُحْلَقُ رَأْسُهُ ‏”‏ ‏.‏

حَدَّثَنَا الْحَسَنُ بْنُ عَلِيٍّ الْخَلاَّلُ، حَدَّثَنَا يَزِيدُ بْنُ هَارُونَ، أَخْبَرَنَا سَعِيدُ بْنُ أَبِي عَرُوبَةَ، عَنْ قَتَادَةَ، عَنِ الْحَسَنِ، عَنْ سَمُرَةَ بْن جُنْدَبٍ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم نَحْوَهُ ‏.‏ قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ ‏.‏ وَالْعَمَلُ عَلَى هَذَا عِنْدَ أَهْلِ الْعِلْمِ يَسْتَحِبُّونَ أَنْ يُذْبَحَ عَنِ الْغُلاَمِ الْعَقِيقَةُ يَوْمَ السَّابِعِ فَإِنْ لَمْ يَتَهَيَّأْ يَوْمَ السَّابِعِ فَيَوْمَ الرَّابِعِ عَشَرَ فَإِنْ لَمْ يَتَهَيَّأْ عُقَّ عَنْهُ يَوْمَ حَادٍ وَعِشْرِينَ وَقَالُوا لاَ يُجْزِئُ فِي الْعَقِيقَةِ مِنَ الشَّاةِ إِلاَّ مَا يُجْزِئُ فِي الأُضْحِيَةِ ‏.‏

সামুরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন: রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন; সকল শিশুই তার আকীকার সাথে বন্ধক (দায়বদ্ধ) অবস্থায় থাকে। জন্মগ্রহণ করার সপ্তম দিনে তার পক্ষে যবেহ করতে হবে, তার নাম রাখতে হবে এবং তার মাথা নেড়া করতে হবে।
(সুনানে তিরমিযি, হাদিস নং ১৫২২)

অবশ্য এই সময়ে যদি কারো আকিকা করা না হয়, পরবর্তীতে করতে চায় বা বড় হওয়ার পর আকিকা করতে চায় তাহলে তা করাতে কোন সমস্যা নেই । তবে এক্ষেত্রে উদ্দেশ্য হলো রাসূলের সুন্নাত পালন করা। এটা নয় যে আকিকার আবশ্যকীয় বিধান কাযা আদায় করা হচ্ছে।
(ফতোয়ায় মাহমুদিয়া ১৭/৫০৯)

আকিকায় পশুর সংখ্যা;

ছেলে সন্তানের আকিকার দুটি ও মেয়ে সন্তানের আকিকা একটি ছাগল বা গরুর সাতভাগের এক ভাগ দিয়ে আদায় করবে

أَخْبَرَنَا عُبَيْدُ اللَّهِ بْنُ سَعِيدٍ قَالَ: حَدَّثَنَا سُفْيَانُ قَالَ: قَالَ عَمْرٌو عَنْ عَطَاءٍ، عَنْ حَبِيبَةَ بِنْتِ مَيْسَرَةَ، عَنْ أُمِّ كُرْزٍ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: عَنِ الْغُلَامِ شَاتَانِ مُكَافَأَتَانِ، وَعَنِ الْجَارِيَةِ شَاةٌ

উম্মে কুরয (রাঃ) থেকে বর্ণিত: তিনি বলেন; রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন; ছেলে সন্তানের আকীকায় দু’টি বকরী একই রকমের, কন্যা সন্তানের আকীকায় একটি বকরী যবেহ করতে হবে।
(সুনানে আন-নাসায়ী, হাদিস নং ৪২১৬)

এটা হলো আকিকার উত্তম পদ্ধতি। তবে যদি কেউ ছেলে সন্তানের জন্য ও একটি ছাগল আকিকা করেন তাহলেও আদায় হয়ে যাবে।

আকীকার পশু;

কোরবানির পশু যেমনভাবে সুস্থ, সবল এবং যে সকল দোষমুক্ত হতে হয়, আকিকার পশুও তেমনিভাবে সুস্থ সবল ও ঐ জাতীয় দোষমুক্ত হতে হবে । তেমনভাবে যে বয়সের পশু দিয়ে কোরবানি করা বৈধ হবে তেমন বয়সের পশু দিয়ে আকিকা ও বৈধ হবে। আর যেসকল পশু দিয়ে কোরবানি সহীহ হবে না তা দিয়ে আকিকা ও করা যাবে না ।
ইমাম তিরমিযি রহ সুনানে তিরমিযিতে লিখেছেন

‏ وَالْعَمَلُ عَلَى هَذَا عِنْدَ أَهْلِ الْعلمانهم قَالُوا لاَ يُجْزِئُ فِي الْعَقِيقَةِ مِنَ الشَّاةِ إِلاَّ مَا يُجْزِئُ فِي الأُضْحِيَة

যে সকল বকরী দিয়ে কোরবানি সহীহ হবে তা দিয়েই আকিকা সহীহ হবে।
তেমনিভাবে আকিকার পশুও নর বা মাদি যেকোন প্রকারের হতে পারে, এতে কোন সমস্যা নেই। একটি হাদিসে প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন

عَنْ أُمِّ كُرْزٍ قَالَتْ: أَتَيْتُ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِالْحُدَيْبِيَةِ أَسْأَلُهُ عَنْ لُحُومِ الْهَدْيِ، فَسَمِعْتُهُ يَقُولُ: عَلَى الْغُلَامِ شَاتَانِ، وَعَلَى الْجَارِيَةِ شَاةٌ، لَا يَضُرُّكُمْ ذُكْرَانًا كُنَّ أَمْ إِنَاثًا

উম্মে কুরয (রাঃ) থেকে বর্ণিত: তিনি বলেন; আমি হুদায়বিয়ায় রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট কুরবানীর জন্তুর গোশ্ত সম্বন্ধে জিজ্ঞাসা করার জন্য উপস্থিত হই। তখন আমি তাঁকে বলতে শুনি; পুত্র সন্তানের পক্ষ হতে আকীকার জন্য দু’টি বকরী, আর কন্যা সন্তানের জন্য একটি বকরী তা নর হোক বা মাদী, যবেহ করতে হবে।
(সুনানে আন-নাসায়ী, হাদিস নং ৪২১৭)

তবে কেউ যদি গরুতে ভাগ রেখে আকিকা করতে চায় সেক্ষেত্রে ছেলে সন্তানের জন্য দুইভাগ ও মেয়ে সন্তানের জন্য একভাগ রাখবে।
আকিকার সময় বাচ্চার চুল কাটা, চুলের পরিমাণ স্বর্ণ বা রুপা সদকা করা ও নাম না রাখলে নাম রাখা।

একটি হাদিসে প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন

أَخْبَرَنَا عَمْرُو بْنُ عَلِيٍّ، وَمُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ الْأَعْلَى قَالَا: حَدَّثَنَا يَزِيدُ وَهُوَ ابْنُ زُرَيْعٍ، عَنْ سَعِيدٍ، أَنْبَأَنَا قَتَادَةُ، عَنْ الْحَسَنِ، عَنْ سَمُرَةَ بْنِ جُنْدُبٍ، عَنْ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «كُلُّ غُلَامٍ رَهِينٌ بِعَقِيقَتِهِ تُذْبَحُ عَنْهُ يَوْمَ سَابِعِهِ وَيُحْلَقُ رَأْسُهُ وَيُسَمَّى»

সামুরা ইব্‌ন জুনদুব (রাঃ) রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে বর্ণিত: তিনি বলেন; প্রত্যেক সন্তান স্বীয় আকীকার সাথে আবদ্ধ। তার পক্ষ হতে তা তার জন্মের সপ্তম দিনে যবেহ করতে হবে। সেদিন তার মাথা মুণ্ডন করতে হবে এবং তার নাম রাখতে হবে।(সুনানে আন-নাসায়ী, হাদিস নং ৪২২০)

অপর এক হাদিসে এসেছে

حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ يَحْيَى الْقُطَعِيُّ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الأَعْلَى بْنُ عَبْدِ الأَعْلَى، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ إِسْحَاقَ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ أَبِي بَكْرٍ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ عَلِيِّ بْنِ الْحُسَيْنِ، عَنْ عَلِيِّ بْنِ أَبِي طَالِبٍ، قَالَ عَقَّ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم عَنِ الْحَسَنِ بِشَاةٍ وَقَالَ ‏ “‏ يَا فَاطِمَةُ احْلِقِي رَأْسَهُ وَتَصَدَّقِي بِزِنَةِ شَعْرِهِ فِضَّةً ‏”‏ ‏.‏ قَالَ فَوَزَنَتْهُ فَكَانَ وَزْنُهُ دِرْهَمًا أَوْ بَعْضَ دِرْهَمٍ ‏.‏ قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ وَإِسْنَادُهُ لَيْسَ بِمُتَّصِلٍ ‏.‏ وَأَبُو جَعْفَرٍ مُحَمَّدُ بْنُ عَلِيِّ بْنِ الْحُسَيْنِ لَمْ يُدْرِكْ عَلِيَّ بْنَ أَبِي طَالِبٍ ‏.‏

আলী ইবনু আবী তালিব (রাঃ) থেকে বর্ণিত: তিনি বলেন, একটি বকরী দ্বারা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হাসানের আকীকা করেন এবং বলেন; হে ফাতিমা! তার মাথা নেড়া করে দাও এবং তার চুলের ওজনের অনুরূপ রূপা দান কর। তদানুযায়ী আমি তার চুল ওজন করলাম এবং তার ওজন এক দিরহাম বা তার কাছাকাছি হয়।
(জামে’ আত-তিরমিজি, হাদিস নং ১৫১৯)

পিতা-মাতা কী আকিকার গোশত খেতে পারবে?

আমাদের দেশে অনেকেই মনে করেন যে, পিতা-মাতা আকিকার গোশত খেতে পারবে না। তাদের এ ধরনা সঠিক নয় । বরং কোরবানির গোশত যেমনভাবে সকলে খেতে পারে তেমনভাবে আকিকার গোশত ও সকলে খেতে পারবে। তাই আকিকার গোশত পিতা-মাতা খাওয়ায় কোন সমস্যা নেই। বরং পিতা-মাতা খেতে পারবে না এমন ধরনা রাখা ভুল ও অনুচিত।

কোরবানী গরুতে ও আকিকার উদ্দেশ্যে অংশ নেওয়া যাবে?

একাধিক ব্যক্তি মিলে যদি কোন পশু ক্রয় করে কারো উদ্দেশ্য ওলিমা করা আর কারো উদ্দেশ্য আকিকা করা তাহলেও আকিকা আদায় হবে।
(রদ্দুল মুহতার ৬/৩২২ফতোয়ায় মাহমুদিয়া ১৭/৫১৮) 

কোন ব্যক্তি যদি কোরবানির গরুতে আকিকার জন্য অংশ রাখে এতে কোরবানী ও আদায় হবে আকিকা ও আদায় হয়ে যাবে।

 ﺃﻥ اﻟﺠﻬﺎﺕ – ﻭﺇﻥ اﺧﺘﻠﻔﺖ ﺻﻮﺭﺓ – ﻓﻬﻲ ﻓﻲ اﻟﻤﻌﻨﻰ ﻭاﺣﺪ؛ ﻷﻥ اﻟﻤﻘﺼﻮﺩ ﻣﻦ اﻟﻜﻞ اﻟﺘﻘﺮﺏ ﺇﻟﻰ اﻟﻠﻪ – ﻋﺰ ﺷﺄﻧﻪ – ﻭﻛﺬﻟﻚ ﺇﻥ ﺃﺭاﺩ ﺑﻌﻀﻬﻢ اﻟﻌﻘﻴﻘﺔ ﻋﻦ ﻭﻟﺪ ﻭﻟﺪ ﻟﻪ ﻣﻦ ﻗﺒﻞ؛ ﻷﻥ ﺫﻟﻚ ﺟﻬﺔ اﻟﺘﻘﺮﺏ ﺇﻟﻰ اﻟﻠﻪ ﺗﻌﺎﻟﻰ – ﻋﺰ ﺷﺄﻧﻪ – ﺑﺎﻟﺸﻜﺮ ﻋﻠﻰ ﻣﺎ ﺃﻧﻌﻢ ﻋﻠﻴﻪ ﻣﻦ
اﻟﻮﻟﺪ، ﻛﺬا ﺫﻛﺮ ﻣﺤﻤﺪ – ﺭﺣﻤﻪ اﻟﻠﻪ – ﻓﻲ ﻧﻮاﺩﺭ اﻟﻀﺤﺎﻳﺎ
كذا في بدائع الصنائع ٥/٧٢
ﻭﺇﻥ ﺃﺭاﺩ ﺃﺣﺪﻫﻢ اﻟﻌﻘﻴﻘﺔ ﻋﻦ ﻭﻟﺪ ﻭﻟﺪ ﻟﻪ ﻣﻦ ﻗﺒﻞ ﺟﺎﺯ؛ ﻷﻥ ﺫﻟﻚ ﺟﻬﺔ اﻟﺘﻘﺮﺏ ﺇﻟﻰ اﻟﻠﻪ ﺑﺎﻟﺸﻜﺮ ﻋﻠﻰ ﻣﺎ ﺃﻧﻌﻢ ﻣﻦ اﻟﻮﻟﺪ
كذا في البحر الرائق ٦/٨
ﻭﻛﺬا ﻟﻮ ﺃﺭاﺩ ﺑﻌﻀﻬﻢ اﻟﻌﻘﻴﻘﺔ ﻋﻦ ﻭﻟﺪ ﻗﺪ ﻭﻟﺪ ﻟﻪ ﻣﻦ ﻗﺒﻞ ﻷﻥ ﺫﻟﻚ ﺟﻬﺔ اﻟﺘﻘﺮﺏ ﺑﺎﻟﺸﻜﺮ ﻋﻠﻰ ﻧﻌﻤﺔ اﻟﻮﻟﺪ
كذا في رد المحتار٦/٣٢٦

আকিকার গোশত বন্টনের তরীকা;

কোরবানির গোশতের ন্যায় আকিকার গোশত ও তিনভাগের একভাগ গরিব মিসকিনকে দান করে দেওয়া উত্তম।

আল্লাহ তায়ালা সকলকে সহীহভাবে দ্বীন বোঝার তাওফীক দান করুন এবং ইলম অনুযায়ী আমল‌করার তাওফীক দান করুন।

এখানে মন্তব্য করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

লেখক পরিচিতি

নামঃ মুহাম্মদ সালমান হুসাইন।
ইফতাঃ ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষ, জামিয়া শারইয়্যাহ মালিবাগ।
উলুমুল হাদিসঃ ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষ, মাদ্রাসা বাইতুল উলুম ঢালকানগর।
তাকমীলঃ ২০১৫ শিক্ষাবর্ষ, মাদ্রাসা বাইতুল উলুম ঢালকানগর।
হিফজঃ ২০০৭ শিক্ষাবর্ষ, জামিয়া আরাবিয়া হাজী ইউনুস কওমী মাদ্রাসা।
সিনিয়র শিক্ষকঃ হাজিপাড়া কাশীপুর নারায়ণগঞ্জ

আমাদের অনুসরণ করুন

সর্বশেষ ইউটিউব ভিডিও

সাম্প্রতিক পোস্ট

সাম্প্রতিক পৃষ্ঠা