fbpx

যাকাত

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম

বিষয়ঃ যাকাত
(নির্বাচিত গুরুত্বপূর্ণ আয়াত-এর তরজমা ও তাফসীর)

আয়াতে কারীমাহ্

فَأَقِيمُوا الصَّلَاةَ وَآتُوا الزَّكَاةَ وَاعْتَصِمُوا بِاللَّهِ هُوَ مَوْلَاكُمْ فَنِعْمَ الْمَوْلَى وَنِعْمَ النَّصِيرُ (78

[الحج: 78]

সরল অনুবাদ

কাজেই তোমরা নামায প্রতিষ্ঠা কর, যাকাত দাও আর আল্লাহকে আঁকড়ে ধর। তিনিই তোমাদের অভিভাবক। কতই না উত্তম অভিভাবক আর কতই না উত্তম সাহায্যকারী!

সূরার নাম ঃ  আল হাজ্জ্ব
অবর্তীণ ঃ মদীনায়
আয়াত নম্বরঃ ৭৮-এর শেষ অংশ

আয়াতে কারীমাহ্

 إِنَّ الَّذِينَ آمَنُوا وَعَمِلُوا الصَّالِحَاتِ وَأَقَامُوا الصَّلَاةَ وَآتَوُا الزَّكَاةَ لَهُمْ أَجْرُهُمْ عِنْدَ رَبِّهِمْ وَلَا خَوْفٌ عَلَيْهِمْ وَلَا هُمْ يَحْزَنُونَ (277

 [البقرة: 277]

সরল অনুবাদ

নিশ্চয়ই যারা বিশ্বাস স্থাপন করেছে, সৎকাজ করেছে, নামায প্রতিষ্ঠিত করেছে এবং যাকাত দান করেছে, তাদের জন্যে তাদের পুরষ্কার তাদের পালনকর্তার কছে রয়েছে। তাদের কোন শঙ্কা নেই এবং তারা দুঃখিত হবে না।

সূরার নাম ঃ আল বাকারা
অবর্তীণ ঃ মদীনায়
আয়াত নম্বরঃ ২৭৭

আয়াতে কারীমাহ্

الَّذِينَ يُقِيمُونَ الصَّلَاةَ وَيُؤْتُونَ الزَّكَاةَ وَهُمْ بِالْآخِرَةِ هُمْ يُوقِنُونَ (4

أُولَئِكَ عَلَى هُدًى مِنْ رَبِّهِمْ وَأُولَئِكَ هُمُ الْمُفْلِحُونَ (5)

 [لقمان: 4، 5]

সরল অনুবাদ

  • যারা যথাযথভাবে নামায পড়ে, যাকাত দেয় ও পরলোকে নিশ্চিত বিশ্বাস রাখে। [১]
  • তারাই তাদের পালনকর্তার সঠিক পথে আছে আর তারাই সফলকাম। (দুনিয়া ও আখেরাতে)[২]

সূরার নাম ঃ লোকমান
অবর্তীণ ঃ মক্কায়
আয়াত নম্বরঃ ৪ ও ৫

সংক্ষিপ্ত তাফসীর

[১] নামায ও যাকাত আদায় এবং আখেরাতের প্রতি বিশ্বাস এই তিনটিই অতীব গুরুত্বপূর্ণ, তাই বিশেষ করে এইগুলোকে (পরহেযগার ও সৎকর্মপরায়ণদের কর্মরূপে) উল্লেখ করা হয়েছে। নচেৎ তাঁরা তো আসলে সকল ফরয ও সুন্নত বরং মুস্তাহাব কর্মাবলীকেও যথাযথভাবে মেনে চলেন।
[২] فَلاح শব্দের আভিধানিক অর্থ হল চিরা, বিদীর্ণ করা, কাটা। চাষীকে فَلاَّح বলা হয়, যেহেতু সেও মাটি চিরে ওর মধ্যে বীজ বপন করে থাকে। مُفلِح (সফলকাম)ও সে হয়, যে অনেক কষ্ট ও সংকটের বুক চিরে নিজ লক্ষ্যে পৌঁছতে পারে। অথবা তার জন্য সাফল্যের পথ খুলে যায়; তার জন্য সে পথ বন্ধ হয় না। শরীয়তের দৃষ্টিতে সফলকাম সেই ব্যক্তি, যে ধূলির ধরায় বাস করে নিজ প্রভুকে সন্তুষ্ট করে নেয় এবং তার বিনিময়ে আখেরাতে আল্লাহর রহমত ও ক্ষমার অধিকারী বিবেচিত হয়। আর সেই সাথে যদি পার্থিব সুখ-শান্তি লাভ হয়, তাহলে তো সোনায় সোহাগা। তবে সত্যিকার সফলতা পরকালের সফলতা; যদিও দুনিয়ার মানুষ এর বিপরীত দুনিয়ার আরাম-আয়েশ ও সুখ-সম্পদকে আসল সফলতা মনে করে। আয়াতে সেই সব মু’মিনদেরকে সফলতার সুসংবাদ শোনানো হয়েছে, যাঁদের মধ্যে উক্ত গুণাবলী বিদ্যমান আছে।

আয়াতে কারীমাহ্

 فَإِنْ تَابُوا وَأَقَامُوا الصَّلَاةَ وَآتَوُا الزَّكَاةَ فَإِخْوَانُكُمْ فِي الدِّينِ وَنُفَصِّلُ الْآيَاتِ لِقَوْمٍ يَعْلَمُونَ (11

[التوبة: 11]

সরল অনুবাদ

অবশ্য তারা যদি তওবা করে, নামায কায়েম করে আর যাকাত আদায় করে, তবে তারা তোমাদের দ্বীনী ভাই।[১] আর আমি বিধানসমূহে জ্ঞানী লোকদের জন্যে সর্বস্তরে র্বণনা করে থাকি।

সূরার নাম ঃ আত তাওবাহ্
অবর্তীণ ঃ মদীনায়
আয়াত নম্বরঃ ১১

সংক্ষিপ্ত তাফসীর

[১] নামায হল তাওহীদ ও রিসালতের উপর বিশ্বাস স্থাপন করার পর ইসলামের সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ স্তম্ভ, যা আল্লাহর হক। তাতে আল্লাহর ইবাদতের বিভিন্ন দিক রয়েছে। এতে রয়েছে হাত বেঁধে কিয়াম, রুকূ ও সিজদা। এতে রয়েছে দু’আ ও মুনাজাত, আল্লাহর বড়ত্ব ও মহিমা এবং নিজের মিনতি ও অসহায়তার প্রকাশ। ইবাদতের এই সমস্ত প্রকার ও ধরন কেবল আল্লাহর জন্য নির্দিষ্ট।
নামাযের পর দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ ও ফরযকৃত রুকন হল যাকাত। যাতে আল্লাহর ইবাদতের সাথে সাথে বান্দারও হক শামিল রয়েছে। যাকাতের অর্থ দ্বারা সমাজের ও বিশেষ করে যাকাতদাতার আত্মীয় গরীব-মিসকীন ও অক্ষম লোকদের প্রয়োজন মিটে থাকে। এই জন্য হাদীসে দুই সাক্ষ্য দানের পর উক্ত দু’টি বিষয়কে পরিষ্কার করে বর্ণনা করা হয়েছে।
নবী (সাঃ) বলেছেন, “আমাকে আদেশ করা হয়েছে যে, লোকদের বিরুদ্ধে আমি যেন ততক্ষণ পর্যন্ত যুদ্ধ করতে থাকি, যতক্ষণ পর্যন্ত না তারা সাক্ষী দেয় যে, আল্লাহ ছাড়া কোন সত্য উপাস্য নেই এবং মুহাম্মাদ (সাঃ) আল্লাহর রসূল। আর নামায কায়েম করে ও যাকাত প্রদান করে।”
(বুখারী ঈমান অধ্যায়, মুসলিম ঈমান অধ্যায়)
আব্দুল্লাহ বিন মাসউদ বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি যাকাত প্রদান করে না, তার নামাযও গ্রহণযোগ্য নয়।’ (ঐ)