fbpx

পবিত্রতা

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম

বিষয়ঃ পবিত্রতা
(নির্বাচিত গুরুত্বপূর্ণ আয়াত-এর তরজমা ও তাফসীর)

আয়াতে কারীমাহ্

وَعَهِدْنَا إِلَى إِبْرَاهِيمَ وَإِسْمَاعِيلَ أَنْ طَهِّرَا بَيْتِيَ لِلطَّائِفِينَ وَالْعَاكِفِينَ وَالرُّكَّعِ السُّجُودِ (125

[البقرة: 125]

সরল অনুবাদ

আর আমি আদেশ দিয়েছিলাম ইব্রাহীম ও ইসমাইলকে পবিত্র রাখতে আমার ঘর তাওয়াফকারী,  ই’তিকাফকারী, রুকু ও সিজদাকারীদের জন্য।

সূরার নাম ঃ বাক্বারাহ্
অবর্তীণ ঃ মদীনায়
আয়াত নম্বরঃ ১২৫  –আয়াতের শেষ অংশ

আয়াতে কারীমাহ্

وَيَسْأَلُونَكَ عَنِ الْمَحِيضِ قُلْ هُوَ أَذًى فَاعْتَزِلُوا النِّسَاءَ فِي الْمَحِيضِ وَلَا تَقْرَبُوهُنَّ حَتَّى يَطْهُرْنَ فَإِذَا تَطَهَّرْنَ فَأْتُوهُنَّ مِنْ حَيْثُ أَمَرَكُمُ اللَّهُ إِنَّ اللَّهَ يُحِبُّ التَّوَّابِينَ وَيُحِبُّ الْمُتَطَهِّرِينَ (222

[البقرة: 222]

সরল অনুবাদ

আর লোকেরা জিজ্ঞাসা করে আপনাকে হায়েয (ঋতু)  সম্পর্কে। আপনি বলুনঃ তা কষ্টদায়ক। অতএব তোমরা দূরে থাকবে স্ত্রীদের থেকে হায়েজ অবস্থায় এবং তাদের কাছে যাবে না, [১] যতক্ষণ না তারা পবিত্র হয়। আর তারা যখন উত্তমরূপে পবিত্র হবে [২] তখন গমন করবে তাদের কাছে যেভাবে নির্দেশ দিয়েছেন  [৩] তোমাদেরকে আল্লাহ। নিশ্চয়ই আল্লাহ ভালবাসেন তাওবাকারীদের এবং ভালোবাসেন পবিত্রতা অর্জনকারীদের।

সূরার নাম ঃ বাক্বারাহ্
অবর্তীণ ঃ মদীনায়
আয়াত নম্বরঃ ২২২

সংক্ষিপ্ত তাফসীর

[১] সাবালিকা হওয়ার পর প্রত্যেক নারীর লজ্জাস্থান থেকে মাসে একবার নিয়মিত যে রক্ত আসে, তাকে হায়েয (মাসিক, ঋতু বা রজঃস্রাব) বলা হয়। আবার কখনো কখনো কোন রোগের কারণে বাঁধা নিয়মের অতিরিক্তও আসে; তাকে ইস্তিহাযা বলে। ইস্তিহাযার বিধান হায়েযের থেকে ভিন্ন। মাসিকের দিনগুলোতে নামায মাফ এবং রোযা রাখা নিষেধ। পরে রোযা কাযা করা আবশ্যক। পুরুষের জন্য কেবল সঙ্গম করা নিষেধ, তবে চুম্বন ও আলিঙ্গন করা জায়েয।
অনুরূপ মহিলা এই দিনগুলোতে রান্না সহ সংসারের অন্য সব কাজই করতে পারে। কিন্তু ইয়াহুদীদের মধ্যে এই দিনগুলোতে মহিলাকে সম্পূর্ণ অপবিত্র গণ্য করা হত। তারা তার সাথে মেলামেশা এবং খাওয়া-দাওয়া বৈধ মনে করত না। সাহাবায়ে কেরাম (রাঃ) এ ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করলে এই আয়াত অবতীর্ণ হয়। এতে কেবল সহবাস করা থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে। নিকটবর্তী না হওয়া বা দূরে থাকার অর্থঃ কেবল সঙ্গম করা নিষেধ।
(ইবনে কাসীর ইত্যাদি)
[২] ‘যখন তারা পবিত্র হয়’ এর দু’টি অর্থ বলা হয়েছে।
(ক) যখন রক্ত আসা বন্ধ হয়। অর্থাৎ, গোসল ছাড়াই সে পবিত্র হয়ে যাবে। এমতাবস্থায় পুরুষের জন্য তার সাথে (গোসলের পূর্বে) সহবাস করা জায়েয। ইবনে হায্ম এবং অন্য কিছু ইমামগণ এরই সমর্থক। আল্লামা আলবানীও এই মতের সমর্থন করেছেন। (আদাবুয্ যিফাফ ৪৭ পৃষ্ঠা)
(খ) রক্ত বন্ধ হওয়ার পর গোসল করে পবিত্র হয়।
দ্বিতীয় অর্থানুযায়ী স্ত্রী যতক্ষণ না গোসল করেছে, ততক্ষণ পর্যন্ত তার সাথে সহবাস করা হারাম থাকবে। ইমাম শাওকানী এটাকেই প্রাধান্য দিয়েছেন।
(ফাতহুল ক্বাদীর)
আমাদের নিকট দু’টোই আমলযোগ্য, তবে দ্বিতীয়টি প্রাধান্য পাওয়ার অধিক যোগ্য।
[৩] ‘যে পথে– নির্দেশ দিয়েছেন।’ অর্থাৎ, যোনিপথে। কারণ, মাসিক অবস্থায় এই যোনিপথই ব্যবহার করতে নিষেধ করা হয়েছিল। তাই এখন পবিত্র হওয়ার পর যার অনুমতি দেওয়া হচ্ছে, সেটা এই যোনিপথ ব্যবহার করারই অনুমতি, কোন অন্য পথের নয়। এ থেকে দলীল গ্রহণ করা হয়েছে যে, মহিলার পায়ুপথ (মলদ্বার) ব্যবহার করা হারাম। যেমন হাদীসে এ বিষয়কে আরো পরিষ্কারভাবে বর্ণনা করা হয়েছে।

আয়াতে কারীমাহ্

إِذْ يُغَشِّيكُمُ النُّعَاسَ أَمَنَةً مِنْهُ وَيُنَزِّلُ عَلَيْكُمْ مِنَ السَّمَاءِ مَاءً لِيُطَهِّرَكُمْ بِهِ وَيُذْهِبَ عَنْكُمْ رِجْزَ الشَّيْطَانِ وَلِيَرْبِطَ عَلَى قُلُوبِكُمْ وَيُثَبِّتَ بِهِ الْأَقْدَامَ (11

[الأنفال: 11]

সরল অনুবাদ

স্মরণ কর ! ওই সময়কে যখন আল্লাহ তোমাদের তন্দ্রাচ্ছন্ন করেন [১] তার পক্ষ হতে স্বস্তির জন্য  এবং বর্ষণ করেন তোমাদের উপর আসমান থেকে পানি যাতে পবিত্র করতে পারেন তোমাদের তা দিয়ে এবং দূর করতে পারেন তোমাদের থেকে শয়তানের অপবিত্রতা। [২] আর যাতে তিনি দৃঢ় করতে পারেন তোমাদের অন্তরসমূহ এবং স্থির করতে পারেন তা দিয়ে তোমাদের পা-সমূহ। [৩]

সূরার নাম ঃ আনফল
অবর্তীণ ঃ মদীনায়
আয়াত নম্বরঃ ১১

সংক্ষিপ্ত তাফসীর

[১] দ্বিতীয় পুরস্কার হল, উহুদ যুদ্ধের মত বদরের যুদ্ধেও মহান আল্লাহ মুসলিমদের উপর তন্দ্রা আচ্ছন্ন করেন। যার ফলে তাঁদের হৃদয়-ভার অনেকটা হাল্কা হয়ে যায় এবং দেহ-মনে প্রশান্তি ও স্বস্তি ফিরে আসে।
[২] তৃতীয় পুরস্কার তাঁদেরকে এই দান করলেন যে, তাদের উপর বৃষ্টি বর্ষণ করলেন। যার ফলে
প্রথমতঃ বালুময় মাটিতে চলাফেরা সহজ হল।
দ্বিতীয়তঃ ওযূ ও গোসল করা সহজ হল।
তৃতীয়তঃ শয়তান মু’মিনদের অন্তরে যে কুমন্ত্রণা দিচ্ছিল যে,
(১) তোমরা আল্লাহর নেক বান্দা হওয়া সত্ত্বেও পানি হতে এত দূরে অবস্থান করছ।
(২) অপবিত্র অবস্থায় যুদ্ধ করলে তোমরা কিভাবে আল্লাহর দয়া ও সাহায্য পেতে পারবে?
(৩) তোমরা পিপাসিত অথচ তোমাদের শত্রুরা পিপাসিত নয় ইত্যাদি ইত্যাদি– তা দূর হয়ে গেল।
[৩] এটি ছিল চতুর্থ পুরস্কারঃ অন্তর ও পা দৃঢ়ীকরণ।