fbpx
আত্নকেন্দ্রিক সংকির্ণতার মুক্তি চাই :বিশ্বজয়ী দিল চাই। গাফলোতু মে সুয়ে তু, ওঠো আখ খুলো, দেখো উম্মত কা কিয়া হাল আওর তেরা যিম্মাদারি কিযা হ্যায় মনযিল হারিয়ে অস্তিত্ব সংকটে ভোগা একটি জাতি যখন অস্তিত্ব রক্ষার লড়াইয়ে মনোযোগী না হয়ে মেতে থাকে হাসি-ঠাট্টা ও অভ্যন্তরীণ কোন্দলে, তখন সে জাতির ধ্বংসের ব্যাপারে আর কোনো সন্দেহ-সংশয়ের অবকাশ থাকে না।
কালের আয়নায় ইসলাম; অতীত, বর্তমান ও ভবিষৎ চিন্তা

কালের আয়নায় ইসলাম; অতীত, বর্তমান ও ভবিষৎ চিন্তা

কালের আয়নায় ইসলাম; অতীত-বর্তমান-ভবিষৎ চিন্তা, পান্জেরী রাত পোহাবার কত দেরী?

আত্নকেন্দ্রিক সংকির্ণতার মুক্তি চাই; বিশ্বজয়ী দিল চাই।
 
গাফলোতু মে সুয়ে তু, ওঠো আখ খুলো, দেখো উম্মত কা কিয়া হাল আওর তেরা যিম্মাদারি কিযা হ্যায়
মনযিল হারিয়ে অস্তিত্ব সংকটে ভোগা একটি জাতি যখন অস্তিত্ব রক্ষার লড়াইয়ে মনোযোগী না হয়ে মেতে থাকে হাসি-ঠাট্টা ও অভ্যন্তরীণ কোন্দলে, তখন সে জাতির ধ্বংসের ব্যাপারে আর কোনো সন্দেহ-সংশয়ের অবকাশ থাকে না।
  • সময় এখন কতটা নাজুক, তা কেবল তারাই অনুধাবন করতে পারবে, যারা মালাহিম, ফিতান ও আলামতে কিয়ামতের পাশাপাশি মুসলিম জাতির উত্থান-পতনের ইতিহাস সম্পর্কে জানে ৷
  • বিস্তারিতভাবে জানে ইতিহাসের ইতিহাস তথা ইতিহাসের পিছনের ইতিহাস, যেমন কামাল আতাতুর্কের ইতিহাস জানে আবার কামালের সৃষ্টির কারণ, সৃষ্টির পিছনে দায়ী কারা এসব বিস্তৃত জানে ৷
  • সে ইসলাম মুসলিম জাতি, মুসলিম দেশ, ইসলামী খিলাফত, ইসলামী আদালত ও বিচার ব্যবস্থা প্রতিটি ভুখন্ডে ইসলামী সভ্যতা ও সংস্কৃতি প্রতিটি দেশের ইসলামী সাহিত্য ও ভাষার নেতৃত্ব, ইসলামী সংবিধান ও ইসলামী শিক্ষা সিলেবাস ও পদ্ধতির পতনের ইতিহাস, পতনের পিছনের ইতিহাস জানে ৷
  • কেন পতন হল!, কিভাবে পতন হল!, কার দ্বারা পতন হল!, কোন পরিস্থিতি ও প্রক্ষাপটে পতন হল!, কারা দায়ী!, কে ভিলেন!, কে নায়ক!, কে ভিকটিম!, কে আসামী!, কে নাটের গুরু!, কে কলুর বলদ!, এসব কিছুর ব্যাপারে বিস্তৃত জ্ঞান রাখে।
  • কিভাবে উল্লেখিত সকল ইসলামিক স্থানগুলো কাফের, নাস্তিক ও ধর্মনিরপেক্ষবাদিদের কব্জায় চলে গেল! কেন তারা ইসলামী দেশে মুসলিমদের নেতৃত্বে আসতে পারল, কিভাবে সম্ভব হল। এসব কিছুর পিছনে কারণ কি! দায়ি কারা!
  • কোন স্থবিরতা, জেদি, হটকারিতা, সংকির্ণতা ও সংস্কারহীনতা আমাদেরকে যামানার বাদশাহ হতে রাস্তার ফকির বানিয়ে দিল! ও কাফের, নাস্তিক ও ধর্মনিপেক্ষবাদিদের দাস বানিয়ে দিল !
এসব নিয়ে সে ভাবে, গবেষণা করে, চিন্তা করে, আত্নসমালোচনা করে, ইসলাহের জন্য কাজ করে। ইসলাম মুসলিম জাতি, ইসলামী খিলাফত ও মুসলিম দেশের নব উত্থান কামনা করে, বুকে স্বপ্ন লালন করে, এর জন্য কষ্ট-কুরবানি করে। সে সব ধরনের পতনের কার্যকারণ হেতু-প্রেক্ষাপট, পরিস্থিতি, ভুলসিদ্ধান্ত, ভুল নেতৃত্ব, ভুল পদক্ষেপ, পতনের মুল খলনায়ক, সহকারী ভিকটিম, দুশমনের শক্তি, বিশালত্ব, ফাঁদ-কৌশল, টোঁপ-খেলার, ছক-সমরকৌশল ও বিশ্বের ভূ-রাজনীতির অতীত-বর্তমান-ভবিষৎ সম্বন্ধেও ভালোভাবে ওয়াকিফহাল। আল্লাহর শপথ! যদি না এসব বিষয়ে আমার টুটাফাটা অধ্যয়ন থাকত, তাহলে আজ আমিও সে পথেই হাঁটতাম, যে পথে হাঁটছে আমার বন্ধু-বান্ধব, অসংখ্য মাদারিসের ছাত্র, আত্মীয়-স্বজন-অনেক মুহতারাম উস্তাযবৃন্দসহ পরিচিত-অপরিচিত অধিকাংশ মানুষ। এ সঙ্গীন মুহূর্তে আমাদের কী করণীয় ছিল, আর আমরা করছিটা কী! এ বড় আজিব এক ব্যাপার। 
  • আমি দেখতে পাচ্ছি, তাতারি ফিতনা, স্পেন ফিতনা, ক্রুসেড ফিতনা, বুখরা-সমরকন্দ ফিতনা, উসমানি খিলাফত পতন ফিতনা, মুঘলসাম্রাজ্য পতন ফিতনার আগ মুহূর্তে মুসলমানদের যে অবস্থা ছিল, ঠিক সে অবস্থায়ই আজ বিরাজ করছে আমাদের বাংলাদেশে উলামা-তলাবা সমাজে,রাজনীতির অংগনে, মুসলিম সমাজে।
  • জানি, আমার এক চিৎকারে এ জাতির কোনো বোধদয় হবে না। তবুও মাঝেমধ্যে বোকার মতো চিল্লাই ৷ মুয়াযযিন হিসেবে আযান দিয়ে যাই।
  • মুফতি শফি রহ. এর ভাষায়; “রাজনীতির অংগনের সমস্যার সমাধান আমরা করতে না পারলেও ধর্মীয় অংগনের ফেরকাবাজি-দলাদলি-গালাগালি ফতোয়াবাজির সমাধান আমরা করতে পারি ৷
  • যদি আমরা শিরক, কুফুর, নাস্তিকতা ও ধর্মত্যাগকে ঠেকানো আর কালিমার ভিত্তিতে ঐক্যকে নিজেদের ফিকির, মিশন ও কাজ আকারে গ্রহণ করি৷
  • তাহলে “কালিমাকে ঐক্যের ভিত্তি আর নাস্তিকতা ও কুফুর মোকাবিলা করা” এহাই একমাত্র সেই প্লাটফরম যেখানে মুসলিম সমাজে বিরাজমান সকল ধর্মীয় ফিরকা দল, মত, নির্বিশেষে সকল মুসলিম ঐকবদ্ধ হতে পারে। আর ইসলামের যৌগিক বিষয়ের উপর মৌলিক বিষয়কে অগ্রাধিকারমূলক প্রাধান্য দিয়ে সম্মিলিত পরিকল্পনা ও প্রচেষ্টায় ইসলামের জাতীয় ও আন্তর্জাতিক কাজে আত্ননিয়োগ করতে পারে।
 

দেখুন; জাওয়াহিরুল ফিকহ প্রথম খন্ডে উম্মাহর ঐক্যভাবনা-পদ্ধতি বিষয়ক প্রবন্ধ।

আজ আমি সংক্ষিপ্তাকারে বাংলাদেশের ধর্মীয় অংগন ও মুসলিম সমাজে চলমান অস্থিরতা, বিশৃংখলা ও মনস্তাত্বিক হালত নিয়ে তিনটি কথা বলব।

  • আর এসবের কি কুপ্রভাব আমাদের ধর্ম, সমাজ, রাষ্ট্র ও জীবনে পড়ছে। বিপদ, ধ্বংস ফলাফল কি হবে, হতে পারে তা নিয়ে সবাইকে চিন্তা-ভাবনার আহ্বান জানাচ্ছি এবং তড়িৎগতিতে পুর্ব চিন্তা, কর্মে ভুল থাকলে আজই এই মরণব্যাধী ক্যান্সার হতে বের হয়ে ইসলাম, মুসলিম জাতি ও মুসলিম দেশ এই তিনটির স্বার্থে দৃষ্টিভংগী-সিদ্ধান্ত, কর্মপন্থা ও জীবনের রোখ পরিবর্তন করার অনুরোধ করছি ৷
  • অন্যথায় জাহালত, অনৈক্য, দলাদলি, ফেরকাবাজি, ফতোয়াবাজি, দারিদ্রতা, হিংসা-বিদ্ধেষ ও গালাগালির আগুনে আমি আমার দল, বিপক্ষ দলসহ ইসলাম, মুসলিম জাতি ও মুসলিম দেশ এই তিনটি নিয়ে জ্বলেপুড়ে ঐভাবে ভস্ম হবো যেভাবে স্পেন, বুখারা, সমরকন্দ, আব্বাসি খিলাফত, উসমানি খিলাফত ও মুঘলসাম্রাজ্য সবকিছু নিয়ে জ্বলেপুড়ে ভস্ম হয়েছে ৷ এই ধ্বংসের করাল গ্রাস থেকে আমরা কেউই রেহাই পাবো না।

 বাংলাদেশের ধর্মীয় অঙ্গনঃ

চিত্র-০১ঃ
ধর্মীয় অংগনে সকল হালকার সব ধর্মীয় গ্রুপের অন্তর্দ্বন্দ্ব এখনও শেষ হচ্ছে না; বরং কারা যেন এ আগুনে আরও ঘি ঢালছে; অথচ এ থেকে আমাদের এখন হাজারও ক্রোশ দূরে অবস্থান করা জরুরি ছিল। এখন আমাদের এ সময় নেই যে, আমরা আহলে হাদিস-হানাফি, জামাত-হিফাজত, আলিয়া-কওমি, মানহাজি-মাদখালি, দেওবন্দি, বেরলভী, নদভী-থানভী, মাদানী, আযহারী, শিয়া-সুন্নি, বিদআতি, সালাফি, আশআরী, মাতুরিদীর জটিল আকিদা মাসয়ালার অন্তর্কলহ জনগণকে জড়িয়ে ফেলব।পিছনে বাপ-দাদার ইখতেলাফ -ঝগড়ার রেশ কাঁধে বয়ে বেড়াব জন্ম হতে জন্মানতরে,প্রজন্ম হতে প্রজন্মান্তরে আউস, খাযরাজের মতবরং আমাদেরকে নিজেদের মধ্যকার সকল ইখতেলাফ-দন্দ-কলহ নবী সা.মত মুফতি শফি রহ. এর দেখানো পথে মিটিয়ে ফেলতে হবে। উসকানি জাগিয়ে নিজেদের দমে যাওয়া যুদ্ধের আগুন জ্বালিয়ে নিজেরাই নিজেদেরকে ভস্মিত করব। বর্তমান পরিস্থিতিতে শাখাগত সকল ফিকহি মতভেদ; এমনকি আহলে সুন্নাহর মতানৈক্যপূর্ণ আকিদাগত বিষয়ে মতভিন্নতা থাকলে সেগুলোও এড়িয়ে চলা আবশ্যক।আহলে সুন্নতের কতয়ী-অকাট্য আকিদার হেফাজতের স্বার্থেই মাঠে ময়দানে মতভেদপুর্ণ আকিদার ইখতেলাফকে পরিহার করা সময়ের দাবি ৷ যেমনটি বলেছেন মুফতি শফি রহ. ৷
চিত্র-০২ঃ
সাধারণরা তো দূরে থাক, স্বয়ং ছোট-বড় অনেক আলিমও এখন বিভিন্ন ইস্যুকে কেন্দ্র করে মূল বিষয় ভুলে যাচ্ছে। অথচ এ ইস্যুগুলো তৈরি করার পেছনেও এমন অনেক ষড়যন্ত্র থাকে, যা সাধারণ লোকেরা বোঝে না। তখন তারা মূল বিষয় থেকে মনোযোগ সরিয়ে গৌণ বিষয় নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়ে।যেমনটি বলেছেন মুফতি শফি রহ.৷ কিন্তু আলিমদের তো এ জায়গায় এসে ধোঁকা খাওয়া উচিত নয়, তাদের তো দ্বীনের সকল বিষয়েই সজাগ থাকা জরুরি। দুশমন ও ফিতনার সকল ছিদ্রপথ নখদর্পনে রাখা লাযেম। এ বিষয়গুলো নিয়ে এখনই সচেতন না হলে আমরা সর্বদা এ চক্রেই আটকে থাকব, কখনও চিন্তার এ কয়েদখানা থেকে বের হতে পারব না।
চিত্র-০৩ঃ
আমাদের অধিকাংশ আলিম ও তালিবুল ইলম ভাইদের এখনও আলোচনার বিষয়বস্তু হলো ইখতিলাফি মাসআলা-মাসায়িল, মাজহাব, আকাবির, সাদ কান্ধলবি, জাকির নায়েক, আজহারি, সালাফি, মাতুরিদি, আশআরি, দেওবন্দি, বেরলভী, থানবী, মাদানী ইত্যাদি।অথচ তাদের না আছে প্রয়োজনীয় আকিদার ইলম, না আছে ওয়ালা বারার খবর, না আছে ফিকহ-ফতোয়া, “মালাহিম ফিতান” মুল দুশমন বিষয়ক কোনো ধারণা। আর না আছে বিশ্বরাজনীতি, পরিস্থিতি ও ইতিহাসের প্রতি কোনো আগ্রহ। অথচ বর্তমান এ নাজুক পরিস্থিতিতে এসবের যে কতটা প্রয়োজন, তা যদি বুঝাতে পারতাম! গুরুত্ব ও প্রয়োজনয়ীতার বিচারে কোনটা আগে আর কোনটা পরে, সেটা নির্ধারণ করতে না পারলে এমন ইলম আমার কতটা কাজে লাগবে, ভেবে দেখা উচিত।

এখানে মন্তব্য করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

লেখক পরিচিতি

নামঃ নাজমুল হুদা নুমানী
মক্তব-নাহবেমীরঃ ১৯৯৬ – ২০০০ শিক্ষাবর্ষ, দারুল উলুম আলিমপুর, সিরাজগঞ্জ।
হেদায়াতুন্নাহুঃ ২০০১ শিক্ষাবর্ষ, যাত্রাবাড়ী মাদরাসা।
কাফিয়া-দাওরাঃ ২০০২-২০০৬ শিক্ষাবর্ষ, লালবাগ মাদরাসা।
উচ্চতর আরবী সাহিত্যঃ ২০০৬-২০০৮ শিক্ষাবর্ষ , দারুল মারিফ, চট্টগ্রাম।
উচ্চতর ইসলামী আইন গবেষণাঃ (মুফতী) ২০০৮-২০১০ শিক্ষাবর্ষ, যাত্রাবাড়ী মাদরাসা।
উচ্চতর হাদীস গবেষণাঃ (মুহাদ্দিস) ২০১০-২০১২ শিক্ষাবর্ষ, বসুন্ধরা মাদরাসা।
সংক্ষিপ্ত তাফসিরঃ ২০০৪ রমজান মাস, খাদিমুল ইসলাম, মিরপুর-১৩, মুফতী ইমরান মাযহারি দা বা নিকট।
অনার্সঃ এশিয়ান ভার্সিটি অব বাংলাদেশ, ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগ। (চলমান)
কর্ম জীবনঃ ২০১২ শিক্ষাবর্ষ হতে অধ্যাবদি পর্যন্ত আল্লাহর রহমতে দারুল ইফতার প্রধান মুফতির দায়িত্ব পালন;
এক. জামিয়ুল উলুম ইসলামিয়া, নিকড়া, দোহার, ঢাকা। (খন্ডকালিন প্রথম তিন মাস ইফতার প্রধান মুশরিফ)
দুই. মারকাযু হুজ্জাতিল ইসলাম, মাতুয়াইল, ঢাকা। (ইফতার প্রধান মুশরিফ) : ২০১২ এবং ২০১৩ শিক্ষাবর্ষ।
তিন. মারকাযুল কুরআন বাংলাদেশ, মৌচাক, নারায়ণগন্জ। ২০১৪, ২০১৫ ও ২০১৬ শিক্ষাবর্ষ, দারুল ইফতার প্রধান মুফতীর দায়িত্ব পালন।
চার. জামিয়া মাহমুদিয়া, মৌচাক, নারায়ণগন্জ, এক বছর ইফতার প্রধান মুফতীর দায়িত্ব পালন এবং শায়খুল হাদিস, জামিয়া মাহমুদিয়া, মৌচাক।
পাঁচ. মারকাযুল ফিকহ আল ইসলামী বাংলাদেশ, মৌচাক, নারায়ণগঞ্জ, ৩ বছর চলমান,  আল্লাহর রহমতে প্রতিষ্ঠাতা প্রিন্সিপাল ও প্রধান মুফতী।
খলিফাঃ শাইখুল ইসলাম শাহ্ আহমাদ শফী দাঃ বাঃ
আমাদের অনুসরণ করুন

সর্বশেষ ইউটিউব ভিডিও

Play Video

সাম্প্রতিক পোস্ট

সাম্প্রতিক পৃষ্ঠা