জিহাদ
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম
বিষয়ঃ জিহাদ (প্রচেষ্টা)
(নির্বাচিত গুরুত্বপূর্ণ আয়াত-এর তরজমা ও তাফসীর)
আয়াতে কারীমাহ্
وَقَاتِلُوا فِي سَبِيلِ اللَّهِ الَّذِينَ يُقَاتِلُونَكُمْ وَلَا تَعْتَدُوا إِنَّ اللَّهَ لَا يُحِبُّ الْمُعْتَدِينَ (190
[البقرة: 190]
সরল অনুবাদ
আর লড়াই কর আল্লাহর ওয়াস্তে তাদের সাথে, যারা লড়াই করে তোমাদের সাথে। অবশ্য কারো প্রতি বাড়াবাড়ি করো না। [১] নিশ্চয়ই আল্লাহ সীমালঙ্ঘনকারীদেরকে পছন্দ করেন না।
সূরার নাম ঃ আল বাকারা
অবর্তীণ ঃ মদীনায়
আয়াত নম্বরঃ ১৯০
সংক্ষিপ্ত তাফসীর
[১] এই আয়াতে প্রথমবার সেই লোকদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার অনুমতি দেওয়া হয়েছে, যারা মুসলিমদের বিরুদ্ধে যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত ছিল। আর ‘বাড়াবাড়ি করো না’র অর্থ হল, শত্রুর আঙ্গিক বিকৃতি ঘটায়ো না, মহিলা, শিশু এবং এমন বৃদ্ধকে হত্যা করো না, যে যুদ্ধে কোন প্রকার অংশগ্রহণ করেনি। অনুরূপ গাছ-পালা বা ফসলাদি জ্বালিয়ে দেওয়া এবং কোন অভীষ্ট লাভ ছাড়াই পশু-হত্যা করা ইত্যাদিও বাড়াবাড়ি বলে গণ্য হবে, যা থেকে বিরত থাকতে হবে।
(ইবনে কাসীর)
আয়াতে কারীমাহ্
فَإِنِ انْتَهَوْا فَإِنَّ اللَّهَ غَفُورٌ رَحِيمٌ (192
[البقرة: 192]
সরল অনুবাদ
তারপর যদি তারা বিরত হয়, তবে মহান আল্লাহ্ ক্ষমাশীল, বড়ই দয়ালু।
সূরার নাম ঃ আল বাকারা
অবর্তীণ ঃ মদীনায়
আয়াত নম্বরঃ ১৯২
আয়াতে কারীমাহ্
وَقَاتِلُوهُمْ حَتَّى لَا تَكُونَ فِتْنَةٌ وَيَكُونَ الدِّينُ لِلَّهِ فَإِنِ انْتَهَوْا فَلَا عُدْوَانَ إِلَّا عَلَى الظَّالِمِينَ (193
[البقرة: 193]
সরল অনুবাদ
ফিতনা দূরীভূত না হওয়া পর্যন্ত এবং দ্বীন মহান আল্লাহ্র জন্য নির্ধারিত না হওয়া পর্যন্ত তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করো। তারপর যদি তারা বিরত হয় তবে যালিমদের ছাড়া কারো ওপর কোন প্রকারের কঠোরতা অবলম্বন জায়িয হবে না।
সূরার নাম ঃ আল বাকারা
অবর্তীণ ঃ মদীনায়
আয়াত নম্বরঃ ১৯৩
আয়াতে কারীমাহ্
كُتِبَ عَلَيْكُمُ الْقِتَالُ وَهُوَ كُرْهٌ لَكُمْ وَعَسَى أَنْ تَكْرَهُوا شَيْئًا وَهُوَ خَيْرٌ لَكُمْ وَعَسَى أَنْ تُحِبُّوا شَيْئًا وَهُوَ شَرٌّ لَكُمْ وَاللَّهُ يَعْلَمُ وَأَنْتُمْ لَا تَعْلَمُونَ (216
[البقرة: 216]
সরল অনুবাদ
তোমাদের উপর যুদ্ধ ফরয করা হয়েছে, অথচ তা তোমাদের কাছে অপছন্দনীয়। পক্ষান্তরে তোমাদের কাছে হয়তো কোন একটা বিষয় পছন্দসই নয়, অথচ তা তোমাদের জন্য কল্যাণকর। আর হয়তোবা কোন একটি বিষয় তোমাদের কাছে পছন্দনীয় অথচ তোমাদের জন্যে অকল্যাণকর। বস্তুতঃ আল্লাহই জানেন, তোমরা জান না।[১]
সূরার নাম ঃ আল বাকারা
অবর্তীণ ঃ মদীনায়
আয়াত নম্বরঃ ২১৬
সংক্ষিপ্ত তাফসীর
[১] জিহাদের নির্দেশের একটি উপমা পেশ করে ঈমানদারদের বুঝানো হচ্ছে যে, আল্লাহর প্রত্যেকটি নির্দেশের উপর আমল কর, যদিও তা তোমাদের নিকট অপছন্দনীয় ও ভারী মনে হয়। কারণ, এর পরিণাম ও ফলসমূহ কেবল আল্লাহই জানেন, তোমরা জানো না। হতে পারে এতে তোমাদের জন্য কল্যাণ রয়েছে। যেমন, জিহাদের ফলস্বরূপ তোমরা লাভ করবে বিজয়, সাফল্য, মর্যাদা-সম্মান এবং শীর্ষস্থান ও (যুদ্ধলব্ধ) সম্পদ-সামগ্রী। পক্ষান্তরে তোমরা যেটা পছন্দ কর (অর্থাৎ, জিহাদে না গিয়ে ঘরে বসে থাকা), তার ফল তোমাদের জন্য অতীব বিপজ্জনক হতে পারে। অর্থাৎ, শত্রু তোমাদের উপর জয়যুক্ত হবে এবং তোমাদেরকে লাঞ্ছনা ও অবমাননার শিকার হতে হবে।
আয়াতে কারীমাহ্
إِنَّ الَّذِينَ آمَنُوا وَالَّذِينَ هَاجَرُوا وَجَاهَدُوا فِي سَبِيلِ اللَّهِ أُولَئِكَ يَرْجُونَ رَحْمَتَ اللَّهِ وَاللَّهُ غَفُورٌ رَحِيمٌ (218
[البقرة: 218]
সরল অনুবাদ
নিশ্চয়ই যারা ঈমান এনেছে এবং হিজরত করেছে ও মহান আল্লাহ্র পথে জিহাদ করেছে, এরাই মহান আল্লাহ্র রহমত আশা করে। মহান আল্লাহ্ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।
সূরার নাম ঃ আল বাকারা
অবর্তীণ ঃ মদীনায়
আয়াত নম্বরঃ ২১৮