fbpx

ঋণ

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম

বিষয়ঃ ঋণ (করযে হাসানা)
(নির্বাচিত গুরুত্বপূর্ণ আয়াত-এর তরজমা ও তাফসীর)

আয়াতে কারীমাহ্

مَنْ ذَا الَّذِي يُقْرِضُ اللَّهَ قَرْضًا حَسَنًا فَيُضَاعِفَهُ لَهُ أَضْعَافًا كَثِيرَةً وَاللَّهُ يَقْبِضُ وَيَبْسُطُ وَإِلَيْهِ تُرْجَعُونَ (245

[البقرة: 245]

সরল অনুবাদ

কে সে, যে আল্লাহকে উত্তম ঋণ প্রদান করবে?[১] আল্লাহ তা তার জন্য বহুগুণে বৃদ্ধি করবেন। আল্লাহই জীবিকা সংকুচিত ও সম্প্রসারিত করেন। আর তোমরা তাঁরই নিকট প্রত্যানীত হবে।

সূরার নাম ঃ আল বাকারা
অবর্তীণ ঃ মদীনায়
আয়াত নম্বরঃ ২৪৫

সংক্ষিপ্ত তাফসীর

[১] قَرْضٌ حَسَنٌ (উত্তম ঋণ) প্রদান করার অর্থ আল্লাহর পথে এবং জিহাদে মাল ব্যয় করা। অর্থাৎ, জানের মত মালের কুরবানী দিতেও দ্বিধা করো না। রুযীর প্রসারণ ও সংকোচনের এখতিয়ার কেবল আল্লাহরই হাতে। তিনি উভয়েরই মাধ্যমে তোমাদেরকে পরীক্ষা করে থাকেন; কখনো রুযী হ্রাস করে এবং কখনো তার প্রসার ঘটিয়ে। অতএব আল্লাহর পথে ব্যয় করলে কমে না, বরং মহান আল্লাহ এতে অনেক অনেক বৃদ্ধি দান করেন। কখনো বাহ্যিকভাবে, আবার কখনো অভ্যন্তরীণভাবে মালে বরকত দিয়ে। আর আখেরাতে যে বৃদ্ধি হবে তা অবশ্য অবশ্যই বিস্ময়কর হবে।

আয়াতে কারীমাহ্

مَنْ ذَا الَّذِي يُقْرِضُ اللَّهَ قَرْضًا حَسَنًا فَيُضَاعِفَهُ لَهُ وَلَهُ أَجْرٌ كَرِيمٌ (11

[الحديد: 11]

সরল অনুবাদ

কে আছে ? যে আল্লাহকে দেবে উত্তম ঋণ? তাহলে তিনি তা বহুগুণে তার জন্য বৃদ্ধি করবেন এবং তার জন্য রয়েছে মহাপুরস্কার। [১]

সূরার নাম ঃ আল হাদীদ
অবর্তীণ ঃ মদীনায়
আয়াত নম্বরঃ ১১

সংক্ষিপ্ত তাফসীর

[১] আল্লাহকে উত্তম ঋণ দেওয়ার অর্থ তাঁর পথে দান-খয়রাত করা। এই মাল যা মানুষ আল্লাহর পথে ব্যয় করে, তা আল্লাহরই দেওয়া। তা সত্ত্বেও সেটাকে ঋণ বলে আখ্যায়িত করা আল্লাহর একান্ত অনুগ্রহ বৈ কিছু নয়। তিনি এর প্রতিদান অবশ্যই দেবেন, যেমন ঋণ পরিশোধ করা অত্যাবশ্যক হয়।

আয়াতে কারীমাহ্

هُوَ اللَّهُ الْخَالِقُ الْبَارِئُ الْمُصَوِّرُ لَهُ الْأَسْمَاءُ الْحُسْنَى يُسَبِّحُ لَهُ مَا فِي السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ وَهُوَ الْعَزِيزُ الْحَكِيمُ (24

[الحشر: 24]

সরল অনুবাদ

তিনিই আল্লাহ সৃজনকর্তা, উদ্ভাবনকর্তা,[১] রূপদাতা। সকল উত্তম নাম তাঁরই।[২] আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীতে যা কিছু আছে, সমস্তই তাঁর পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করে।[৩] আর তিনিই পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়। [৪]

সূরার নামঃ আল হাশ্‌র
অবর্তীণঃ মদীনায়
আয়াত নম্বরঃ ২৪

সংক্ষিপ্ত তাফসীর

 [১] বলা হয় যে, خلق ‘খালক্ব’ এর অর্থ, স্বীয় ইচ্ছানুযায়ী আন্দাজ ও অনুমান করা। আর برأ ‘বারাআ’ অর্থ, সেটাকে সৃষ্টি করা, গড়া এবং অস্তিত্বে নিয়ে আসা।
[২] ‘আসমায়ে হুসনা’ (সুন্দর নামাবলী) এর আলোচনা সূরা আ’রাফ ৭:১৮০ নং আয়াতে উল্লিখিত হয়েছে।
[৩] অবস্থার ভাষায় এবং কথ্য ভাষাতেও যেমন, পূর্বে বর্ণনা হয়েছে।
[৪] যে জিনিসেরই তিনি ফায়সালা করেন, তা হিকমত, কৌশল ও প্রজ্ঞা হতে শূন্য থাকে না।

আয়াতে কারীমাহ্

إِنْ تُقْرِضُوا اللَّهَ قَرْضًا حَسَنًا يُضَاعِفْهُ لَكُمْ وَيَغْفِرْ لَكُمْ وَاللَّهُ شَكُورٌ حَلِيمٌ (17

[التغابن: 17]

সরল অনুবাদ

যদি তোমরা আল্লাহকে উত্তম ঋণ দান কর,[১] তাহলে তিনি তোমাদের জন্য তা বহুগুণ বৃদ্ধি করবেন এবং তিনি তোমাদেরকে ক্ষমা করবেন। [২] আর আল্লাহ গুণগ্রাহী, সহনশীল।[৩]

সূরার নাম ঃ আত তাগাবুন
অবর্তীণ ঃ মদীনায়
আয়াত নম্বরঃ ১৭

সংক্ষিপ্ত তাফসীর

 [১] অর্থাৎ, খালেস নিয়তে (আন্তরিকতার সাথে) এবং সন্তুষ্ট মনে যদি আল্লাহর রাস্তায় ব্যয় কর। (তাহলে তা তোমাদের বৃথা যাবে না। বরং তা ঋণের মত পরিশোধ করা হবে।)
[২] অর্থাৎ, তা কয়েক গুণ বাড়িয়ে পরিশোধ করার সাথে সাথে তিনি তোমাদের গোনাহসমূহকেও মার্জনা করে দেবেন।
[৩] তিনি গুণগ্রাহীঃ তিনি তাঁর অনুগতদেরকে أَضْعَافًا مُضَاعَفَةً বহুগুণ সওয়াব দানে ধন্য করেন। তিনি সহনশীলঃ তিনি অবাধ্যদেরকে সত্বর পাকড়াও করেন না।